আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের হাজার হাজার কৃষক একাধিক দাবিতে প্রায় আড়াই হাজার ট্রাক্টর নিয়ে দিল্লি যাত্রা করেছেন। পথে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার মধ্যবর্তী শম্ভু সীমানায় প্রতিবাদী কৃষকদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ব্যবহার করেছে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী। এতে পুলিশের সঙ্গে কৃষকদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
এমনিতেই পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা এবং দিল্লিতে ঢোকার সমস্ত রকম প্রবেশপথে ব্যারিকেড, কাঁটা দেওয়া তার জড়িয়ে কার্যত দুর্গের চেহারা দেওয়া হয়েছে। যদিও কৃষক সংগঠনগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তারা মাত্র আধ ঘণ্টার পরে সমস্ত ব্যারিকেড তুলে ফেলবে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পাঞ্জাবের ফতেগড় সাহিব থেকে শুরু হয় প্রতিবাদী কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। মিছিলের অগ্রভাগেই রয়েছে কালো ত্রিপলে ঢাকা ট্রাক্টরগুলো।
কৃষকদের দুটি বড় সংগঠন সংযুক্ত কিসান মোর্চা এবং কিসান মজদুর মোর্চা গত ডিসেম্বরেই দাবি আদায়ে ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দেয়। দুটি সংগঠনের আওতায় মূলত পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের সাড়ে তিনশটি ছোট-বড় কৃষক সংগঠন রয়েছে।
তবে ২০২০ সালের আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা দুই কৃষকনেতা রাকেশ টিকায়েত এবং গুরনাম সিংহ চারুনি মঙ্গলবারের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নেই।
মঙ্গলবার প্রতিবাদী কৃষকদের নেতৃত্বে দুই কৃষক নেতা সারওয়ান সিংহ পান্ধের এবং জগজিৎ সিংহ দাল্লেওয়ালের থাকার কথা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
এদিকে কৃষক আন্দোলন প্রতিরোধের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। হরিয়ানা সরকার তড়িঘড়ি দুটি বড় স্টেডিয়ামে অস্থায়ী জেল তৈরি করেছে। কৃষকরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তাদের আটক করে ওই দুটি জেলে রাখা হবে বলে জানায় আনন্দবাজার পত্রিকা।
সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষ যাতে এই আন্দোলনের জেরে অসুবিধার মুখে না পড়েন সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলে জানা যায়।
কৃষকদের কর্মসূচির আগে দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এক মাস (১২ মার্চ পর্যন্ত) ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
আন্দোল কেন?
২০২০ সালে তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লি সীমান্তে অবস্থানে বসেছিলেন কৃষকেরা। তিনটি দাবি হলো- ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য, কৃষিঋণ মওকুফ এবং স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাবের রূপায়ণ। পরে তিনটি আইনই বাতিল করা হয়।
অন্যদিকে ২০২০-২১ সালের প্রতিবাদে কৃষকদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা খারিজের দাবি জানিয়ে আসছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল ১২ (ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর বৈঠকে বসে ২০২০ সালের ইলেকট্রিসিটি আইন বাতিল করার বিষয়ে কৃষক নেতাদের আশ্বস্ত করেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বৈঠকে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরির ঘটনায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানানো হয়।
তবে কৃষকদের মূল তিনটি দাবি- ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য, কৃষিঋণ মকুব এবং স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাবের বাস্তবায়ন নিয়ে দুইপক্ষ কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
বৈঠকে যোগ দেওয়া কৃষকদের এক প্রতিনিধির অভিযোগ, দু’বছর আগে কৃষকদের অর্ধেক দাবি মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কেন্দ্র কিছুই করেনি। কৃষকেরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলেও সরকার সময় নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ তার।
আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি শান্তি-প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে কেনএফের বৈঠকের কথা রয়েছে। সশস্ত্র সংঘাত বন্ধে এর আগের বৈঠকে উভয়পক্ষ সম্মত হলেও কেএনএফ সমঝোতা চুক্তি ভঙ্গ করছে বলে অভিযোগ করেছেন শান্তি কমিটির সদস্যরা।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com