চট্টগ্রাম:- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আওতা বাড়ছে। গঠন করা হচ্ছে নতুন আটটি থানা। এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রস্তাব বর্তমানে বিবেচনার জন্য রয়েছে। প্রথম প্রস্তাবে সিএমপির আওতাধীন এলাকায় নতুন করে আরও চারটি থানা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ চারটি থানা হলো বঙ্গবন্ধু টানেলের দুই প্রান্তে দুটি থানা, মোহরা থানা ও কাট্টলী থানা। এ প্রস্তাবটি কেবিনেট সেক্রেটারির দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় চট্টগ্রাম মহানগর ও হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, পটিয়া থানার মধ্যবর্তী অংশ ভেঙে চারটি থানা গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নতুনভাবে আটটি থানা সৃষ্টির ক্ষেত্রে পুলিশ সদর দপ্তরের সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন সিএমপি কর্মকর্তারা।
সিএমপির উপকমিশনার (ডিসি–এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) এসএম মোস্তাইন হোসাইন বলেন, প্রথম প্রস্তাবনায় সিএমপির আওতাধীন কর্ণফুলী, আকবরশাহ ও চান্দগাঁও থানা ভেঙে নতুন চাটি থানার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে বর্তমান উপজেলা থেকে দূরবর্তী ও মহানগর থেকে কাছে হওয়ায় হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড ও পটিয়া উপজেলার কিছু অংশে পুলিশের সেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নতুন চারটি থানা গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নগরীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুরক্ষিত করতে হলে পুলিশের সংখ্যা আরও চার থেকে পাঁচ হাজার বাড়ানো প্রয়োজন। এই বিবেচনায় আমরা নগরীর সঙ্গে জেলার কিছু এলাকা যুক্ত করে নতুন এই চারটি থানা বাড়িয়ে সিএমপির আয়তন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।
জেলার অংশ সংযুক্ত করে প্রস্তাবিত নতুন চারটি থানা হলো হাটহাজারী থানাধীন ১৩ নং দক্ষিণ মাদার্শা, ১৪ নং শিকারপুর, ১৫ নং বুড়িশ্চর ইউনিয়ন নিয়ে নতুন মদুনাঘাট থানা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১ নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড, ১১ নং ফতেপুর ও ১২ নং চিকনদন্ডী ইউনিয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থানা। সীতাকুণ্ড মডেল থানা এলাকার ৮ নং সোনাছড়ি, ৯ নং ভাটিয়ারী ও ১০ নং সলিমপুর ইউনিয়নের আংশিক এলাকা নিয়ে ফৌজদারহাট থানা। পটিয়া থানাধীন ৪ নং কোলাগাঁও, ৫ নং হাবিলাসদ্বীপ, ৬ নং কুসুমপুরা ও ৭ নং জিরি ইউনিয়ন নিয়ে কালারপোল থানা।
সিএমপির তথ্যমতে, ১৯৭৮ সালে প্রায় ২০৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছয়টি থানা নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। ২২ বছর পর ২০০০ সালের ২৭ মে সিএমপিতে নতুন আরও ছয়টি থানা যুক্ত হয়। এগুলো হচ্ছে খুলশী, বায়েজিদ বোস্তামী, পতেঙ্গা, বাকলিয়া, হালিশহর ও কর্ণফুলী থানা। এর ১৩ বছর পর ২০১৩ সালের ৩০ মে নতুন আরও চার থানা গঠন করা হয়। এগুলো হচ্ছে আকবরশাহ, সদরঘাট, চকবাজার ও ইপিজেড। বর্তমানে সিএমপির থানার সংখ্যা ১৬টি। আয়তন ৩০৪ দশমিক ৬৬ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ সালের অক্টোবরে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মোহা. আব্দুল জলিল মন্ডল চারটি নতুন থানা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এগুলো হচ্ছে কুয়াইশ, ফতেয়াবাদ, ভাটিয়ারী ও শিকলবাহা। ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর জেলার বিভিন্ন এলাকা নতুন থানায় যুক্ত করা নিয়ে মতামত জানতে সিএমপি জেলা পুলিশ সুপারকে একটি চিঠি দিয়েছিল।
২০১৬ সালের ৮ জুন ওই চিঠির জবাবে তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জেলা পুলিশ নিজেরাই থানা সম্প্রসারণে আগ্রহী হওয়ায় সিএমপির প্রস্তাবে তাদের আপত্তি আছে। এর ফলে চার থানা বাড়ানোর বিষয়ে সিএমপির উদ্যোগ ভেস্তে যায়। পরে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারের সময় থেকে বর্তমান কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়ের সময়কালীন সিএমপিতে নতুন থানা বৃদ্ধির প্রস্তাব দুটি ধাপে ধাপে আলোর মুখ দেখতে চলেছে।আজাদী
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com