ডেস্ক রির্পোট:- দুটি ক্যাথল্যাব মেশিনের একটি অকেজো দীর্ঘ ২৭ মাস। অপর মেশিনটি দিয়েই হৃদরোগীদের হার্টের রিং পরানোর সেবা দিয়ে আসছিলেন চিকিৎসকরা। যদিও তা ছিল রোগীর তুলনায় অপ্রতুল।
তবে শেষ পর্যন্ত চমেক হাসপাতালের সে ক্যাথল্যাব মেশিনটিও অকেজো হয়ে পড়েছে। যার কারণে নামমাত্র মূল্যে হৃদরোগীদের হার্টের রিং পরানোর সেবা বন্ধ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বৃহৎ এ সরকারি হাসপাতালে।
জানা যায়, গত ২ জানুয়ারি হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাব মেশিনটিতে হঠাৎ ত্রুটি দেখা দেয়। সর্বশেষ গত ৪ জানুয়ারিতে এক রোগীর হার্টে রিং বসানোর সময় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকেই পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার ৬১০ টাকা মূল্যের মেশিনটি।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর থেকে একই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা দ্বিতীয় মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে। মেশিনটি সচল করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তাগাদা দিলেও ‘রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি’ সংক্রান্ত জটিলতায় আজও তা সচল করা যায়নি। যার কারণে দুটো মেশিন অচল থাকায় হার্টের রিং পরানোর সেবা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হৃদরোগীরা।
চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. আশিষ দে বলেন, একটি মেশিন দীর্ঘসময় ধরে নষ্ট। সর্বশেষ গত ৪ জানুয়ারি এক রোগীর রিং পরানোর সময় হঠাৎ নষ্ট হয়ে যায় অপর মেশিনটি। এরপর থেকে সেবা বন্ধ রয়েছে। রিং পরানোর মেশিন ছাড়া হৃদরোগ বিভাগ চালানো দুরূহ। রোগীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। দ্রুত মেশিনটি সচলের প্রয়োজন।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে স্থাপন করা মেশিনটি সরবরাহ করে ঢাকার ‘মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড’ নামে এক প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী মেশিনটির ওয়ারেন্টি সময়কাল সাত বছর। তবে ওয়ারেন্টি শেষ হওয়ার আগেই মেশিনটি এখন অকেজো। বিষয়টি গত ৬ জানুয়ারি লিখিতভাবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা হয়।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ক্যাথল্যাব মেশিনের ত্রুটি চিহ্নিতের জন্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীরা চমেক হাসপাতালে আসেন। তারা দীর্ঘসময় ধরে মেশিনটির ত্রুটি চিহ্নিতের চেষ্টা করেন। তবে মেশিনটি সচল করতে পারেননি প্রকৌশলীরা।
জানতে চাইলে মেডিগ্রাফিক লিমিটেডের চট্টগ্রামের ইনচার্জ কামাল আহমেদ বলেন, ইঞ্জিনিয়াররা মেশিনের ডাটাবেজ সংগ্রহ করেছেন। তা ইমেইলে প্রিন্সিপাল কোম্পানির কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা (প্রিন্সিপাল কোম্পানি) ডাটাবেজ যাচাইবাছাই শেষে ত্রুটি শনাক্ত করে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেবেন। এরপর ত্রুটি অনুযায়ী কাজ করা হবে। এজন্য কিছুদিন সময় লাগবে।
এদিকে, একমাত্র ক্যাথল্যাব মেশিন অকেজো থাকায় গেল এক সপ্তাহ ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের রিং পরানো কিংবা এনজিওগ্রাম (হার্টের ব্লক শনাক্ত) করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যার কারণে জরুরি মমুহূর্তের রোগীরাও যেতে বাধ্য হচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে। এতে সরকারি হাসপাতালের তুলনায় আকাশচুম্বী খরচে সেবা নিতে হচ্ছে রোগীদের। যদিও মেশিনটি দ্রুত সচল করতে তদারকি করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, অকেজো হওয়ার পর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে খবর দিলে তাদের ইঞ্জিনিয়াররা এসেছিল। তারা মেশিনটি দেখেছে। ত্রুটি শনাক্তের জন্য মেশিনটির ডাটাবেজ সংগ্রহ করে তা প্রিন্সিপাল কোম্পানিকে সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছে। কিছুদিন সময় চেয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। হৃদরোগ বিভাগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করছি।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com