ডেস্ক রির্পোট:- রেলপথ ও ট্রেনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই অঞ্চল থেকে মোট ৩২টি ট্রেনের দুই দিনের চলাচল স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আজ শনিবার দুপুরের কমলাপুরে ঢাকা রেলস্টেশনে পুড়ে যাওয়া বেনাপোল এক্সপ্রেসের কোচ দেখতে এসে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
কামরুল আহসান বলেন, ‘কিছু লোকাল ট্রেন, যেগুলোর দিনের বেলাতে মুভমেন্ট কম থাকে, এমন পূর্বাঞ্চলের ২০টি এবং পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি ট্রেন এই দুই দিন চলবে না। লোকাল ট্রেনগুলো বন্ধ রাখা হলেও আন্তনগর সব ট্রেন আগের মতোই চলাচল করবে।’
কেন স্থগিত করা হয়েছে জানতে চাইলে রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ‘যাত্রীর মুভমেন্ট কম থাকার কারণে এই ট্রেনগুলো সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ট্রেনে আমাদের যেসব কর্মচারী আছে, তারা অন্য ট্রেনগুলোতে কাজ করবে। ইলেকশনের পূর্ব মুহূর্তে আমাদের লোকোমোটিভগুলো দিয়ে রেললাইনের নিরাপত্তা দেখব। পুরো কাজটাই করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে সুসংগঠিত করার জন্য।’
বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ের পাশাপাশি পুলিশ ও অন্য সংস্থার সদস্যরাও কাজ করছেন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এটা নাশকতামূলক কার্যক্রম। এটা এখন ফাইনালি বলা যাবে না। যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁরা তো পুড়ে গেছেন। এটা ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব না। এ ঘটনায় কমলাপুরে জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে।’
ক্ষতি সম্পর্কে কামরুল আহসান বলেন, ‘বেনাপোল এক্সপ্রেসের দুটি বগি একেবারে পুড়ে গেছে এবং পাওয়ার কার আংশিক পুড়ে গেছে।’
এর আগে সকালে (শনিবার) কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিলেন ২১ জোড়া ট্রেন দুই দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। সবগুলো ট্রেন লোকাল, মেইল ও কমিউটার।
বন্ধ থাকা ট্রেনগুলো হলো—বলাকা, তুরাগ-১, মহুয়া, কর্ণফুলী, তিতাস-১, রাজশাহী এক্সপ্রেস, তুরাগ-৩, তিতাস-২, নোয়াখালী এক্সপ্রেস, ভাওয়াল, সুরমা মেইল ও দেওয়ানগঞ্জ কমিউনিটি ও টাঙ্গাইল কমিউনিটি। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের আটটি লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গোপীবাগে পুড়ে যাওয়া বেনাপোল এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন রুটের আটটি ট্রেন চলাচল দুই দিন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার আজ মধ্যরাতে তাঁর ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান।
ট্রেনগুলো হলো বেনাপোল এক্সপ্রেস ও ঢালারচর এক্সপ্রেস, মহানন্দা (আপ/ডাউন), রকেট (আপ/গাউন), পদ্মরাগ (২১/২২), রংপুর শাটল (৯৭/৯৮), ঢাকা কমিউটার (৯৯), রাজশাহী কমিউটার (৫/৬) ও বগুড়া কমিউটার (৫/৬)। এ ছাড়া চিলমারী কমিউটার ও লোকাল (৪৬২/৪৫৫/৪৫৬/৪৬১) ৬ জানুয়ারি (আংশিক) ও ৭ জানুয়ারি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ ডিসেম্বর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও হরতাল-অবরোধে নাশকতা এড়াতে পাঁচ জোড়া ট্রেনের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন বলা হয়েছিল, রাত্রিকালীন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ মনে করায় এসব ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করা ট্রেনগুলো ছিল—ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকে ভূঞাপুর, জামালপুর থেকে সরিষাবাড়ী, উত্তরা এক্সপ্রেস ও ঈশ্বরদী থেকে রহনপুরগামী লোকাল ট্রেন। এসব ট্রেন এখনো চালু হয়নি।
রেলওয়ে তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে রেলপথের ১৩টি স্থানে এবং ছয়টি ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া তিনটি স্থানে রেললাইন কাটা এবং ফিশপ্লেটের ক্লিপ খুলে নেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশের ছয়টি অঞ্চলের মধ্যে নাশকতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঢাকা অঞ্চলে।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com