রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারে দু’দিনব্যাপী শুরু হওয়া ৪৮তম কঠিন চীবর দানোৎসব চীবর দানের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে এ চীবর দান করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতব্যাপী তুলা থেকে সুতা কেটে রং করণ এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বেইন (বিশেষ পরিধেয় বস্ত্র ) বুনন করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে পূণার্থীদের উদ্দেশ্যে পঞ্চশীল পাঠ করেন- চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। চীবর দানে বিশ্ব শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন, রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার ।
রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ানের সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বেইন ঘর উদ্বোধন করেন, রাজবন বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান এবং চরকায় তুলা থেকে সুতা কেটে বেইন তৈরি উদ্বোধন করেন, বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা মঞ্জুলিকা চাকমা।
উল্লেখ্য, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাউপাসিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা কেটে রং করণ, বয়ন ও সেলাই শেষে চীবর (বিশেষ পরিধেয় বস্ত্র) দানকার্য সম্পাদন করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহাদানযজ্ঞ সম্পাদন করার কারণে বৌদ্ধরা এই ধর্মীয় উৎসবকে ‘দানোত্তম কঠিন চীবর দান’ বলে।
রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে এ মহাদানযজ্ঞ সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৭ সালে। তার আগেও ১৯৭৪ সালে শ্রাবকবুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তে রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলার তিনটিলা বৌদ্ধ বিহারে বিশাখার ঐতিহ্যবাহী নিয়মে এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পুনঃপ্রবর্তন করেন। সেই থেকে প্রত্যেক বছর রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারসহ পার্বত্য তিন জেলার রাজবন বিহারের শাখাসমূহে বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পাদন করা হয়ে থাকে।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com