ডেস্ক রির্পোট:-পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। ৫৮৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পে এ পর্যন্ত ৩৮ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে। গত অর্থবছরে এ প্রকল্পে ৩৫ কোটি টাকা পেয়েও খরচের খাতা ছিল শূন্য। ফলে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
একই অবস্থা চার জেলায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পে। ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ৫০০ বেডেড হাসপাতাল ও এনসিলারি ভবন ইন পাবনা, যশোর, কক্সবাজার ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতাল, নোয়াখালী’ প্রকল্পেও গত অর্থবছর বরাদ্দ ছিল ৭৫ কোটি টাকা। কিন্তু কানাকড়িও খরচ হয়নি। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া ২ হাজার ১০৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ। অবকাঠামোগত অগ্রগতি শূন্য।
এ দুই প্রকল্পের মতো গত অর্থবছরের পুরো সময়ে ৯৪ উন্নয়ন প্রকল্পে কানাকড়িও খরচ হয়নি। যদিও প্রকল্পগুলোতে মোট বরাদ্দ ছিল ১ হাজার কোটি টাকার বেশি। এমন তথ্য উঠে এসেছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিছু প্রকল্পে টাকা পেয়েও খরচ হয়নি। আবার কিছু প্রকল্পে বরাদ্দ না থাকার কারণে খরচ করা যায়নি। এর মধ্যে বেশ কিছু প্রকল্প এরই মধ্যে মেয়াদ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। ৫৩টি প্রকল্পে গত বছর মাত্র ১ লাখ টাকা করে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে ১২টি প্রকল্প সেই ১ লাখ টাকাও খরচ করতে পারেনি।
টাকা পেয়েও খরচ করতে পারেনি—এমন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ‘কনস্ট্রাকশন অব এলসি স্টেশন অ্যাট হিলি বুড়িমারি অ্যান্ড বাংলাবান্দা প্রকল্প, বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি টাকা; সীমান্ত এলাকায় বিজিবির ৭৩টি কম্পোজিট আধুনিক বিওপি নির্মাণ, বরাদ্দ ১১১ কোটি টাকা; বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নব সৃজিত নারায়ণগঞ্জ (৬২ বিজিবি) ব্যাটালিয়নের অবকাঠামোগত বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা; গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ, বরাদ্দ ছিল ৩০৩ কোটি টাকা; নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ ব্যবস্থাপনা, বরাদ্দ ছিল ১৮ কোটি টাকা; ভারতের সঙ্গে রেলসংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ, বরাদ্দ ছিল ১৫ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে অর্থছাড় না হওয়া বা দেরিতে অর্থছাড় হওয়া, ভূমি অধিগ্রহণ না হওয়া, দরপত্র আহ্বানে দেরি হওয়া, দরপত্র রেসপনসিভ না হওয়া, প্রকল্পের ঋণ না পাওয়া, মামলাজনিত সমস্যা, দাতাদের সঙ্গে ঋণচুক্তিতে দেরি হওয়াকে প্রকল্পগুলোর অর্থ ব্যয় না হওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত অর্থবছরে এডিপির আওতাভুক্ত ছিল মোট ১ হাজার ৮৩৬টি প্রকল্প। ন্যূনতম খরচ না করা ৯৪টি প্রকল্প ছাড়াও ৬৭টি প্রকল্প বরাদ্দকৃত অর্থের ২৫ শতাংশের কম খরচ করেছে, যা হতাশাজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বরাদ্দের ৫০ শতাংশের কম খরচ করে ‘সন্তোষজনক নয়’, এমন প্রকল্প রয়েছে ৭৯টি।
এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়া অনেক দিন ধরে চলে আসছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা ছাড়া, টাকা পেয়েও তা খরচ করতে না পারা অনাকাঙ্ক্ষিত। খরচ না করার কোনো কারণ থাকলে তার সমাধান করতে হবে।আজকের পত্রিকা
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com