ডেস্ক রির্পোট:- ২০২২ সালে দেশে ৯ হাজার ৭৬৪ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪ হাজার ৩৬০ জন।
ধর্ষণের পর হত্যার করা হয়েছে ৪৫০ জনকে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৭ হাজার ২৭টি। গণমাধ্যম ও পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনজিও প্রতিষ্ঠান লাইট হাউজ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস- ২০২৩ উপলক্ষে সোমবার (৬ মার্চ) ‘মিডিয়া অ্যাডভোকেসি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে লাইট হাউজের নির্বাহী প্রধান মো. হারুন আর রশিদ বলেন, ২০২২ সালে মোট ৯ হাজার ৭৬৪ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪ হাজার ৩৬০ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হন ৪৫০ জন। আর দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২৪০ জন। যৌতুকের কারণে মারধর করা হয়েছে ২ হাজার ৬৭৫ জনকে এবং যৌতুক না পেয়ে হত্যা করা হয়েছে ১৫৫ জনকে। অপহরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৭০ জনকে। এ সকল বিষয়ে ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১৭ হাজার ২৭টি মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাধারণত নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা গুরুত্বর হলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) নয়টি পত্রিকা ও কিছু অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের তথ্যের ভিত্তিতে জানিয়েছে, গত ১১ মাসে (২০২২ সালে) নারী ও শিশু নির্যাতনের ৩ হাজার ১৮৪টি খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ শতাংশ ধর্ষণের খবর। অনলাইনেও নারী ও শিশু নির্যাতন ব্যাপক বেড়েছে। পুলিশ সাইবার সাপোর্ট সেন্টার ফর উইমেন (পিসিএসডব্লিইউ) অনুসারে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ভুয়া আইডি, আইডি হ্যাক, ব্ল্যাকমেইলিং, মুঠোফোনে হয়রানি, আপত্তিকর কনটেন্ট বা বিষয় ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন ৮ হাজার ৭১৫ জন নারী।
হারুন আরও বলেন, সরকারি-বেসরকারি তথ্য বলছে পাঁচ বছর আগের তুলনায় নারী ও শিশু নির্যতন দমন আইনে মাসে গড়ে ৩৫০টি মামলা বেড়েছে। বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, প্রতারণা, যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন প্লাটফর্ম। গত বছরের শুরুর দিকের তুলনায় শেষের দিকে অনলাইনে নির্যাতনের অভিযোগ বেড়েছে ২৫ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে ৫৪ শতাংশ নারী জীবনে একবার হলেও শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী এই সহিংসতা শুধু নারী ও কন্যার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে না, সামগ্রিকভাবে দেশ-সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। সমাজে নারীদের প্রতিনিয়ত শারীরিক মানসিকভাবে অপদস্থ হতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাচীন আমলের বিভিন্ন সামাজিক প্রথা কুসংস্কার এমনকি লোকলজ্জার ভয় কাটিয়ে নারী এখন পুরুষের পাশাপাশি পথ চলতে শুরু করেছে। কিন্তু এ সময় এসেও পথেঘাটে, বাস-ট্রেন এমনকি বাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মস্থলেও নারীরা ব্যাপক হারে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। যৌতুক, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, ধর্ষণ, হত্যাসহ নারী সহিংসতার ঘটনা নিত্যদিনের। নারীরা রাজনৈতিক সহিংসতারও শিকার হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নারীপক্ষের পরিচালক অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আয়েশা নার্গীস প্রমুখ।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com