মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি):- শীত যত বাড়ছে, খেজুরের রসের চাহিদাও তত বাড়ছে। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গাছিরা।
গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুরগাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি, প্লাস্টিকের ড্রাম, স্টিলের ড্রাম ইত্যাদি বেঁধে রাখেন রসের জন্য। পরদিন কুয়াশাজড়ানো সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। খেজুরের রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা।
শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুরগাছের রস সংগ্রহ করা হয়। বছরের পাঁচ মাস রস সংগ্রহ করা যায়। এই রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন গাছিরা। কেউ কেউ কাঁচা রস বিক্রি করেন। ক্রেতারা কাঁচা রস দিয়ে পায়েস রান্না করেন। অনেকেই আবার এই রস জ্বাল দিয়ে বিভিন্ন রকম শীতের পিঠা তৈরি করে থাকেন।
গাছি গোফরান আলী জানান, শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রসের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি খেজুরের রস বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। তবে খেজুরগাছ দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই একসময় হয়তো খেজুরের রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।
আরেক গাছি অহিদ মিয়া বলেন, ‘পাহাড়ে খেজুরের গাছগুলো উঁচুনিচু জায়গায় হওয়ায় রস সংগ্রহ করতে বিপাকে পড়তে হয়। কখনো কখনো রস পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। তার পরেও শীতের মৌসুম কাজে লাগিয়ে কয়েক মাস একটু আলাদা আয় করতে পারি।’
পাইকারি বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা গাছিদের কাছ থেকে ১৮০-১৯০ টাকায় রস কিনি। পরে ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি করি। এ ছাড়া কিছু রস অনলাইনে অর্ডার নিয়ে শহরে কুরিয়ার করে বিক্রি করি। এতে শীত মৌসুমে একটু বাড়তি আয় করা যায়।
সময়ের বিবর্তনে পাহাড়েও গাছপালার সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। বাড়ির আশপাশে থাকা খেজুরের গাছগুলোও রেহাই পাচ্ছে না। এর জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে অন্যান্য গাছের পাশাপাশি খেজুরগাছ রোপণ করা প্রয়োজন বলেও জানান গাছিরা।আজকের পত্রিকা
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com